এই সংখ্যায় ২৬টি কবিতা । লিখেছেন - শর্মিষ্ঠা ঘোষ, ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত, সতীশ বিশ্বাস, কচি রেজা, সুব্রত রয়, মধুমিতা ভট্টাচার্য, শৌনক দত্ত, সুজাতা ঘোষ, দেবেশ ঠাকুর, বেবী সাউ, শশাঙ্কশেখর পাল, জেনিস আক্তার, অনুপম দাশশর্মা, মোহম্মদ আনওয়ারুল কবীর, রূপম মাইতি, আসরাফ জুয়েল, কাকলি দাস, আয়েত হোসেন উজ্জ্বল, কাশীনাথ গুঁই, পল্লব সেনগুপ্ত, পঙ্কজ ভট্টাচার্য, বিদ্যুৎলেখা ঘোষ ও সুমন মল্লিক
সম্পাদকীয়

এই সংখ্যায় সাতাশটি কবিতা দেওয়ার পরও বেশ কয়েকটি
কবিতা হাতে থেকে গেল । সেগুলি পরের সংখ্যায় প্রকাশ করবো । এবার থেকে সাধারণ
সংখ্যায় সর্বাধিক পঁচিশটি কবিতা পোষ্ট করবো ।
দুএকটি প্রয়োজনীয় কথা জানাই – (১) কবিতা পাঠাবেন
পত্রিকার নিজস্ব মেইল আইডিতে anyonishadgalpo@gmail.com ।
(২) অনেকে মেইল মারফত একটি কবিতা পাঠিয়ে দিয়েই চলে যান,
কবিতায় নিজের নামটিও লেখন না বা এক বাক্যের মেসেজও লেখেন না । ফলে কবিতা থেকে যায়
কে লিখেছেন জানা যায় না । মেসেজের স্তুপ ঘেঁটে তা উদ্ধার করা সম্ভব হয় না । জানিয়ে
রাখি, নতুন যারা কবিতা পাঠাচ্ছেন তাঁদের কবিতায় লেখকের নাম ও মেইল আইডি না থাকলে
সেই লেখা গ্রাহ্য হবে না । (৩) বারবার বলা সত্তেও অনেকে পিডিএফ করে বা ‘বাংলা ওয়ার্ড’,
‘বিজয়’ ইত্যাদি ফন্ট’এ লেখা পাঠিয়ে দেন । তাদের আবার বলি ‘অভ্র’তে টাইপ না করলে
কবিতা প্রকাশ করা যায় না ।
(৩) আর একটি বিষয়ে বলি । অনেকে প্রকাশিত নিজের কবিতাটি
ফেসবুকে শেয়ার করেন, ভালোই করেন । কিন্তু ‘অন্যনিষাদ’এর লিঙ্কটা দেন না, শুধু
‘অন্যনিষাদ পত্রিকায় প্রকাশিত আমার কবিতা বলে নিজের কবিতাটি পেস্ট করে দেন । তাদের
বলি নিজের কবিতা শেয়ার করার সময় পত্রিকার লিঙ্কটাও শেয়ার করুন তাহলে ‘অন্যনিষাদ’এর
পরিচিতি বাড়বে এবং অন্য কবি বন্ধুদের কবিতাও আরো বেশি পাঠকের ঠিকানায় পৌছে যাবে ।
সকলকে প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই ।
শর্মিষ্ঠা ঘোষ
স্বর্ণযুগ
স্লোগানগুলো
হাতফেরতা হতে হতে গান হতে পারত
ঝাঁকে
ঝাঁকে গুলির আওয়াজ নাড়িয়ে দিল বদলে দেয়াল
যা
কিনা বিপ্লবের বাপের নিজস্ব ছিল না
আমার
বাপ পিতেমো’ টগবগে যুবককালে ফিরে যাচ্ছেন
মায়েদের
মেটে হাঁড়ির গল্প যেমন শুনেছে রাইসকুকার
বিশদ
হবার বিপজ্জনক অভ্যাস সিন্দুক রেখেছেন কালঠাকুর
সন্ধ্যের
পর গোস্বামী বাড়ির চৌকাঠে গান বসে না
কারা
যেন ছাপাখানা করেছে সেখানে আজকাল
জনশ্রুতি
সেখানে স্বর্ণযুগের দিস্তে দিস্তে ইস্তেহার
বিবেক
ব্যাধিগ্রস্ত
ঘুমিয়ে থাকা সকাল দুপুর রাত্রি কালো
মরণ
ছুঁলেও ঘুম ভাঙে না, মুখপুড়ি কোন স্বর্গে ম’ল !
ভাত
ছেটানো পাতকুড়ুনি পরভৃতের মন লাগে না
সঙের
পুতুল কলের গানে নেচে কুঁদে বেদম হ’ল
তাই
দেখিনা রাজপথে আর বেবেক নামের ভাঙা কুলো ...
ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত
আলোছায়া
অনেকটা
পথ হাঁটতে হবে সাথে
গহনবনের
মধ্যে পাবে আলোছায়া গ্রাম
মনের
মধ্যে পাবে তুমি আলোছায়া গ্রাম
সঙ্গে
থাকো যদি একটু গেলেই দেখতে পাবে
বুকের
মধ্যে জমেছে একফালি এক নদী।
আমার
সঙ্গে হাঁটতে হলে বারংবার
একলা
হতে হবে
আমি
আসলে তোমার মধ্যে থেকে
তোমাকেই
ডাকি অদৃশ্য হাতছানি।
হিয়ার
মাঝে লুকিয়ে থাকি আমি
কায়ার
মধ্যে বেঁধে ফেলি বাসা
আমায়
তুমি ভুলেও যেতে পারো
মনে
রাখার বিপদ সর্বনাশা।
সতীশ বিশ্বাস
ফাঁপা জল
বন্যার
ঘোলা জলে ঢেকে গেছে দু'পারের ফসলের জমি
এখন
বিলাপ করা নির্বুদ্ধিতা শুধু-এ কথাটা
মনে
মনে জানে কিছু নদীর চরিত্র-দেখা
বোদ্ধা
কৃষক
তারা
জানে-একদিন, হঠাৎ উত্তোলিত
এই
সব ফাঁপা জল ফিরে যাবে নদীর গুহায়
আবার
উঠবে জেগে ফিনিক্স শস্যভূমি
অধিক
অধিকতর উর্বরতা নিয়ে-একদিন-
কচি রেজা
আমাকে বাঁশি হয়ে আর জন্মাতে বলো না
গাছ
কি আদর পেয়ে ফুঁপিয়ে ওঠে ,
কতদূর
চলে যাবার পর
ঘনিয়ে
ওঠে ইশারা , বুঝতে পারে না আমার পুরানো কাপড়
চোপড়
কাপড়ের
ভিতরে যে প্রাণের সম্পর্ক তার সামনে ঘন হয়ে দাঁড়ায় রেলিং
একটি
জলের ছায়া উঠে যায় , ছাদ -কে কি বলা যায় লতানো গোলাপ
গোলাপ-ভাঙলে আমার কোনোদিনই ' মা'
মনে হয়
নি
আমাকে
বাঁশি হয়ে আর জন্মাতে বলো না তাতে কুয়াশায়
ভিজে কত যে
চওড়া
এই গূঢ় বেদনা
একথা
বলেছি সেদিন ঝিঁঝিঁ টা-কে এইযে আমি ফল
পাড়তে গিয়ে
তোমাকে
দেখি তারপর তোমাকেও দেখাই
, তুমি
কিন্তু
হারিয়ে গিয়েছিলে
অনেক গাছের ভিড়ে অনেক বছর আগে
আমি
ও চলে যাব মাঠ কুড়াতে কুড়াতে
২
একসাথে না জন্মাতাম যদি, না মরতাম যদি ---
একা একা
মরে গিয়ে এখন ডুবে উঠছি স্বপ্নে
----
তোমাকে
কিন্তু আমি স্বপ্নের অনেক জায়গায় খুঁজেছি
সেদিন কোথায় যেন যাব আমরা
তুমি কী মাঝি ডেকেছিলে
? হঠাৎ
নৈঋত দিকে কী বাতাস
ঘোমটা
জলে পড়লো
আমি ফিরে তাকালাম তুমি অবাক , বাতাসে যেন বললো
আমি
স্বপ্ন নদীর মাঝি গো---
সুব্রত রয়
ছবি
‘আমি
তোমাকে একটু বুঝিয়ে বলতে চাই’
-সানুনয়
বলছিল ছেলে।
‘তোমার
কোনও কথাই শুনবোনা আমি’
-পা
ঠুকে বলেছিল মেয়ে।
‘তোমাকে
যে কি করে বোঝাই’-ছেলের হৃদয় উদ্বেল।
‘কিচ্ছু
বুঝবো না আমি’-মেয়ে গজরায় ‘জাস্ট গো টু হেল’
অতঃপর
ছেলেটিকে মাঝপথে দর্শনীয় করে
দুড়দাড়,
রেগে লাল,
যেদিকে সড়ক
যায়
চলে
গেল মেয়ে।
ছলো
ছলো চোখ ছেলেটির, হতভম্ব মুখ
-মুচকি
হাসেন কবি।
পরদিন,হ্যাঁ পরদিনই,
উড়ন্ত
বাইকে খোলাচুল-
কী
সুন্দর ছবি।
মধুমিতা ভট্টাচার্য
অসুখ ও বৃষ্টির গান
বৃষ্টির শব্দে গান শোনে ছেলেটা
তোমরা
বল ওর অসুখ?
ওর
মত সুখী মন কার?
বর্ষার
টুপটাপ শব্দে ওর মনে বাজনার তাল
মাথা
দোলায় ছেলেটা আপনমনে,
কখনও
ঝড়ের রাতে খিলখিল হাসে!
ঐ ওষুধগুলো তোমরাই খেও
তোমরা...মানে
যারা বৃষ্টিতে কেবল
জলের
ফোঁটা দেখো
অথচ
গান শুনতে পাওনা,
আর
ঝড়ের রাতে
মোমবাতি
আগলে রাখো
তুমুল
হাওয়ায়!
বেঁচে
থাক ছেলে তুই,
বৃষ্টিতে
তোর মনের মেঘে
গানের
সুর ভাসুক
ঝুমঝুম
ঝুমুরের তালে
মেঘের
মাদল বেজে উঠুক।
ঝড়ের
সরগমে
গেয়ে
চল জীবন সঙ্গীত।
কে
বলে এর নাম অসুখ?
তোর
সুখের ঘরে সিঁদ কাটে
কার
সাধ্য?
শৌনক দত্ত
রূপশ্রীর সাথে কোন বর্ষায়
রূপশ্রী,
কিছু
বৃষ্টি পেরিয়ে
ঝাপসা
কাঁচের গল্প
ছুঁয়ে
দেখি
আমাদের
আটপৌড়ে জীবন
মায়াবী
চোখ-জলে ছায়া ফেলে
সময়
পেরিয়ে যায় নৈঃশব্দের আদলে
বৃষ্টিধ্বনি,
মেঘশব্দে
ফিরে আসে স্মৃতি
ফ্রেম
ভাঙ্গা ছবি
ফিরে
আসে রোদেলা কৈশোর ছুট
জীবন
থেমে গেলে
কাঁচের
ওপারে
আমি
চশমা মুছে নেই,একা-
মুগ্ধ
যুবক
সুজাতা ঘোষ
সে আসছে
একটু
ছোট্ট আশা – আমার ভালোবাসা – অঙ্কুর
সাদা
– গোলাপী ভ্রুন !
বার
বার – কতবার কতভাবে লালন করেছি গহ্বরে।
হয়তো
আজ, হয়তো এই সন্ধিক্ষণে
বেড়ে
উঠবে – বেড়ে উঠবে – বেড়ে উঠবে –
একবার
– শুধু একবার দেখতে চায়, এই দুচোখ ভরে
রং বদল
হওয়া আশার পাত খানি।
এও
কি সম্ভব?
আমি
কি পারি আমার নতুন স্বত্বা তৈরি করতে?
জীবিত
কালে তাকে ছুঁয়ে দেখতে?
লাল
কাপড়ে মোরা সাদা কুলফি, একটু নেশা ধরানোর
সাদা
পুরিয়া আর তার সাথে শুরু হওয়া বুকের ধুকপুকানি –
জোরে
খুব জোরে শব্দ করতে করতে যে কোন
মূহুর্তে
থমকে যাওয়া লাল অনুভুতি –
আমি
হাতের পাতা দুটো পায়ের পাতার উপর রেখে
জোরে
আরও জোরে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করছি।
আচ্ছা,
এমন কি হয় না – পুরো বরফে ডোবানো
সিদ্ধির
পুরভরা কুলফি, সূর্যের নীচে দাঁড়িয়ে চড়া
সানব্লক
ক্রিম লাগিয়ে রাখা গোলাপি শরীরের
আনাচে
কানাচে ঘুড়ে বেড়াচ্ছি আর তাপ নিংড়ে নিচ্ছি?
সে
আসছে! সে আসছে – সে আসছে !
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)