
৮ম বর্ষ ২৯তম সংখ্যা ১লা জুলাই ২০১৯

ব্রতী মুখোপাধ্যায়
কবিতাপাঠ
এক একটি শব্দ দেবশিশুর মুখ,পাপস্পর্শ নেই
রেশমের শরীর এক একটি শব্দের
অসাধারণ আলোর খেলা --- হলুদ,নীল,শ্যামল,লাল
হৃদয়খালির মাঠ
এক একজন মায়ের চোখ
এক একজন তাকিয়ে, মনোরমা
মনোরমা,সঙ্গে নেই,ভালোবেসেও
কেউ কিন্তু বন্ধুই,ক্রান্তিকালের,বয়ঃসন্ধিকালের
ভালোই লাগছিল
বুক একসময় আঙুল হয়ে,আদর করতে চেয়ে
তখন ওই ভেজা ভেজা,জল,জলের শুকনো রেখা,চোখের জল
হায়,হায়,আঙুলের ডগা এমন লাল,রক্ত,রক্ত আমার চেনা
হায়,হায়,এইসব আবার,ছাইদানা,স্বপ্নপালক পুড়ে পুড়ে
না ভাই,পড়ছিলাম,কবিতা,লিখেছেন ভাইবন্ধু কেউ,এইসময়
তৈমুর খান
মুঠো
বিদ্রোহই কি সব?
এ বিভেদ সরাবো কী করে?
চারপাশে বিভেদের উৎসব!
কাছাকাছি থেকেও তো দূর
আলোয় ঘেরা অন্ধকারপুর
তুমি আমি সব সর্বনামে
ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখি হাত
কতটুকু পাই?
আজ সব অন্তরীক্ষে জ্বর
একে একে ভেঙে যাচ্ছে ভরসার ঘর
উঠোনে দাঁড়িয়ে মুঠো খুলি
কতটুকু বাকি আছে দেখি অঞ্জলি
অরুণিমা চৌধুরী
প্রতারক
জলের গভীর থেকে শ্বাস টানছি,
জানি,আর একটু এগোলেই ছুঁয়ে দেওয়া যায় অলীক ছবি
অথচ মাথার ভেতর সারাক্ষণ
টিপটিপ করছে সমুদ্র
হারিয়ে যাবার ভয়ে কথাগুলো খসে পড়ছে না
আরেকটু পরেই উঠে আসবে নীল বিষ
বিষণ্ণ চাঁদ তুমুল অন্ধকারের পিছনে হিসহিস করবে মৈথুনশব্দ
বিষণ্ণ চাঁদ তুমুল অন্ধকারের পিছনে হিসহিস করবে মৈথুনশব্দ
আমি স্থির নৈব্যর্ক্তিক
কিছু দেখছি না কিছু শুনছিনা
কিছু দেখছি না কিছু শুনছিনা
জলের গভীর থেকে শ্বাস টানছি,
জানি,আর একটু এগোলেই ছুঁয়ে দেওয়া যায় অলীক ছবি
অথচ মাথার ভেতর সারাক্ষণ
টিপটিপ করছে সমুদ্র
হারিয়ে যাবার ভয়ে কথাগুলো খসে পড়ছে না
জ্বলে যাবার ভয়ে এলোমেলো উড়ছে না
চুল
অথচ পুড়ে যাচ্ছে মৈথুন
শ্বেত রক্তের উপর ভরসা রাখিনি, অবসর জন্ম দিয়েছে পঙ্গু কবিতার সারি
এগিয়ে দ্যাখোনি সে মরে বেঁচে গেছে কিনা
দ্যাখোনি তোমার মতো আমিও পালিয়ে বেড়িয়েছি আলো থেকে অন্ধকারে
সাঁকো থেমে গেছে চাঁদ নিভে গেছে
মঞ্চ থেকে দল বেঁধে নেমে গেছে
বেয়াকুব গর্দভের দল
আয়ুরেখা সেরে উঠবে, এই স্বপ্নে
প্রাক্তন দুঃখগুলো তালুবন্দী করেছি অযথা
এই নাও নাম খ্যাতি যশ
এই নাও গোলাপি কুয়াশা
বহুদিন শরীর মরেছে শুধু ক্লান্ত প্রেম তাকে বহন কেন বহন করে চলেছিল মন!
কোন অজুহাতে
হাতের উপর থেকে হাত সরে যায় !
এই নাও অলস বিকেল যেটুকু কলঙ্ক নাও,
আমার গভীরে প্রোথিত, শোকগুচ্ছ নাও
শহুরে ঔদাসীন্য দিয়ে আরেকবার
তাকে কলুষিত কোরো প্রিয়!
অথচ পুড়ে যাচ্ছে মৈথুন
শ্বেত রক্তের উপর ভরসা রাখিনি, অবসর জন্ম দিয়েছে পঙ্গু কবিতার সারি
এগিয়ে দ্যাখোনি সে মরে বেঁচে গেছে কিনা
দ্যাখোনি তোমার মতো আমিও পালিয়ে বেড়িয়েছি আলো থেকে অন্ধকারে
সাঁকো থেমে গেছে চাঁদ নিভে গেছে
মঞ্চ থেকে দল বেঁধে নেমে গেছে
বেয়াকুব গর্দভের দল
আয়ুরেখা সেরে উঠবে, এই স্বপ্নে
প্রাক্তন দুঃখগুলো তালুবন্দী করেছি অযথা
এই নাও নাম খ্যাতি যশ
এই নাও গোলাপি কুয়াশা
বহুদিন শরীর মরেছে শুধু ক্লান্ত প্রেম তাকে বহন কেন বহন করে চলেছিল মন!
কোন অজুহাতে
হাতের উপর থেকে হাত সরে যায় !
এই নাও অলস বিকেল যেটুকু কলঙ্ক নাও,
আমার গভীরে প্রোথিত, শোকগুচ্ছ নাও
শহুরে ঔদাসীন্য দিয়ে আরেকবার
তাকে কলুষিত কোরো প্রিয়!
বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়
যতদূর চোখ যায়
কেমন কষ্ট হয়
অকস্মাৎ
বিনা নোটিশেই কেউ চলে যায়
অপেক্ষা সাজিয়ে বসে থাকে ছুটে যাওয়া দুরন্ত বালক
যতদূর চোখ যায় তারও চেয়ে আরও আরও দূরে
দৌড়ে গিয়ে খুঁজে আনবার এক তোড়জোড় আকুলিবিকুলি করে মনে।
চোখ নামিয়ে রাখে আকাশের কাছে
চোখ খোলে জানালার কাছে
দূরে নয়, যতদূর চোখ যায় ততদূর নয়
যারা যায় তারা থাকে হৃদয়ের খুব কাছাকাছি ।
অনুপম দাশশর্মা
কাটারি ও কলম
আসেপাশে যশলোভীদের ভীড় জমে যেতেই
ভ্রম জেগে উঠেছে কাটারির
ভাবছে তার যে-কোন কথা
অমান্যতা
গভীর অপরাধ। কেউ যেন না করে
তেমনটি।
অস্বীকার করছি না তার মেঘজমা
ঔজ্জ্বল্যর
যে-কেউ জানু পাতলেই তার কাছে মেলে ধরে
প্রশংসার অলংকার।
তবুও আমি তরোয়ালে দিয়েছি ধার।
.
একক সৈনিক ধার ধারে না ঔদ্ধত্যের
পাতার ফাঁক দিয়ে বুঝে ফেলে
সম্পর্কের দাঁত-নখ
এবং নির্বিকার থেকে এগিয়ে চলে
লক্ষ্যের অভিমুখে।
কাটারির দৌড় অর্থের এপার-ওপার।
ইন্দিরা দাশ
তোমাকে দেওয়া বাকি
তোমাকে দেওয়া বাকি আমার আরও কিছু বহুতল
পুকুর বুজানো সফল ইমারত খাঁচা
আরও কিছু ঘাসজমি-ছাঁটা ধোঁয়া-কারখানা আবিস্কার বাকি
তোমাকে দেওয়া হয়নি আমার নবীনতম পরমাণুবোমাটির পরিচয়
যে দম্ভে আমি ভাইয়ের রক্তে ভিজিয়ে ফেলেছি মাটি
সে ক্ষমতার নিদর্শন বাকি
পরিবর্তে অঝোর বর্ষণ কেঁদে তুমি আবার ভরছ ধানক্ষেত!
তারপর ভিজে ঘাসে পায়ের আঙুলে ভর রেখে
আকাশের রঙ দিলে বদলে, এঁকে দিলে সফেদ বকপাতি
আর পাহাড়ের গায়ে জননীর মুখ!
আলপনা তৈরি হলে শাপলা'র গোলাপী
তবুও জড়িয়ে নিচ্ছ শিউলি চাদর উৎসব শঙ্খে দিতে ডাক!
এবার যে ভিজে উঠবে অসুরেরও চোখ
হে ধরিত্রী, দুর্বৃত্ত মুর্খ দাম্ভিক সন্তানে
এত মায়া সাজে !
ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত
কাচের টবে গাছ
ক্রিস্ট্যাল কাচের টব ড্রয়িং রুমে,
অত্যন্ত পলকা বেদনায় চুরচুর,
সামান্য আঘাতে ধূলোবালি কাচগুড়ো
মিশে যাবে বাতাসে।
মৃত গাছ আমার নিদ্রায়, স্বপ্নবীজ পুঁতব, তাই
মাঝরাতে ঘুম ভেঙে অন্ধকার খুঁজি রাস্তায়;
কালো পিচ ঢালা পথ সাদা পাথরের ফুটপাথ
মানুষের শব্দহীন কথা আর রাতভেদী
হেডলাইট বিঁধছে চোখে, সভ্যতা গ্রাস করছে সব।
আশ্রয় দিল না কেউ,
রাতের আকাশ ছুঁয়েছে নিওন আলোর ঢেউ;
মৃত গাছ, ক্রিস্ট্যাল কাঁচের টব ভেঙে যায়।
চিৎকার করে বলি, এই নৈঃশব্দ্য প্রাণঘাতী,
হাত ধরো কথা বলো।
দশ সহস্র মানুষ রয়েছে আশেপাশে;
দরোজা খোলে না কেউ, আমার শব্দগুলো
নিজেই শুনতে পাই না কানে,
নিঃশব্দে ঠোঁট নড়ে।
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)