
৯ম বর্ষ ৭ম সংখ্যা ২১ জানুয়ারি ২০২০

তিতাস বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রেম
তোমাকে ছড়িয়ে নেবো চোখে,
বিপ্লবের প্রথম সকালে...
যখন জাগেনি কেউ,
ধুলোদের গায়ে লাগেনি
কারোর পা
তখনই আকাশে বিক্ষিপ্ত
স্লোগান...
কারা রোজ মুক্তি চায়
ক্ষিধের আশ্চর্য হাতছানি
থেকে...
চারিদিকে ঘোরে যেন ক্লান্ত
উপগ্রহ!
মাথা ঝুঁকে আসে ক্ষোভে!
কপালের ভাঁজে ঘাম কী
রক্ত বোঝার আগেই
রাস্তা কাঁপানো পদধ্বনি...
হাতে হাত...
তোমাকে ছড়িয়ে নেবো বুকে,
জিতে আসা সমস্ত লড়াইয়ে...
রত্নদীপা দে ঘোষ
ফিরেআসা
যখন ডানা ফুরিয়ে যায়
উড়বার মতো একটি ডাঙাও
বেঁচে থাকে না
অন্ধকার নদীর কাঁধে মাথা
রেখে নিভে যায়
জলের কিংশুক, আকাশ পলাশহারা
নির্জন ছায়াকায়া, মেঘের
উদাস বারিগণ
বিদিশাবৃষ্টিতে হারায়
মেলামেশা
কেউ নেই যেন এই মহল জুড়ে
বেঁচে নেই
বেজে নেই একটিও নিঃশ্বাস
ভিক্ষেপাত্র হাতে আমি
কার কাছে যাই
কার বুকে রাখি পলকের
অলীক, অলৌকিক
আর্তির মতো, প্রদীপহীনা
দেবারতির মতো
বাতাসের অন্ত্রে ভেসে
ভেসে
হৃদির স্বরযন্ত্রে ফিরে
আসি
ইন্দিরা দাশ
ফুল আর কুঁড়ি’র কথা
আমার মায়ের মেয়েবেলায়, ব্যাস্ত যখন পুতুলখেলায়
দিদান তখন হেঁসেল সেরে, উনোকুটি রেঁধে বেড়ে
বলত এসে “ও মেয়ে তুই, সেলাই ফোঁড়াই শেখ্ খান দুই
শিখবি কখন ডালের ফোঁড়ন? হবি না তুই আমার মতন?”
কচি “মা”টি মুচকি হেসে, চুল বাঁধতে বসতো এসে
বলত “মা গো, তোমার মত, বাসতে ভালো শিখব যত
সংসারেতে ছাইবে মায়া, আমি যে ঠিক তোর ই ছায়া
বাড়তে দে মা আপনমনে, সঙ্গোপনে নিজের কোণে।
মা কে যখন চিনতে শিখি, তখন থেকে শুধুই দেখি
উলের বুনোন, আমার পড়া, শীতের কাঁথা’র নকশা জোড়া
বাপি’র প্রিয় রান্নাখানি, রাখবে মনে সব সে জানি!
মা যেন দশ মস্ত হাতে, সামলাতো সব দিনে রাতে।
করলে জিগেস বলত হেসে, “তোর দিদা’ই হলাম অবশেষে”
আমি তখন অল্প অবাক, কলেজ পড়ায় পাই না যে ফাঁক
ভাবি কখন কেমন করে, মায়ের মতই হব ওরে!
সেই বয়েসে নিজের মনে, ভেবেছিলাম সঙ্গোপনে।
আমার মেয়ে হোল বড়, চলায় ফেরায় খরতর
ব্যস্ত সদাই কম্পুটারে, ইমন ধরেও রেওয়াজ করে
দিদান তখন হেঁসেল সেরে, উনোকুটি রেঁধে বেড়ে
বলত এসে “ও মেয়ে তুই, সেলাই ফোঁড়াই শেখ্ খান দুই
শিখবি কখন ডালের ফোঁড়ন? হবি না তুই আমার মতন?”
কচি “মা”টি মুচকি হেসে, চুল বাঁধতে বসতো এসে
বলত “মা গো, তোমার মত, বাসতে ভালো শিখব যত
সংসারেতে ছাইবে মায়া, আমি যে ঠিক তোর ই ছায়া
বাড়তে দে মা আপনমনে, সঙ্গোপনে নিজের কোণে।
মা কে যখন চিনতে শিখি, তখন থেকে শুধুই দেখি
উলের বুনোন, আমার পড়া, শীতের কাঁথা’র নকশা জোড়া
বাপি’র প্রিয় রান্নাখানি, রাখবে মনে সব সে জানি!
মা যেন দশ মস্ত হাতে, সামলাতো সব দিনে রাতে।
করলে জিগেস বলত হেসে, “তোর দিদা’ই হলাম অবশেষে”
আমি তখন অল্প অবাক, কলেজ পড়ায় পাই না যে ফাঁক
ভাবি কখন কেমন করে, মায়ের মতই হব ওরে!
সেই বয়েসে নিজের মনে, ভেবেছিলাম সঙ্গোপনে।
আমার মেয়ে হোল বড়, চলায় ফেরায় খরতর
ব্যস্ত সদাই কম্পুটারে, ইমন ধরেও রেওয়াজ করে
মায়ের
যত রান্না-সেলাই, ফাঁক ফোঁকড়ে যদি শেখাই
হো-হো হেসে জড়িয়ে বলে “মা গো, কেমন করে হ’লে
হো-হো হেসে জড়িয়ে বলে “মা গো, কেমন করে হ’লে
এক্কেবারে
দিদু’র মতন”, আয়না নিয়ে আমিও তখন
দেখতে বসি চেনা এ মুখ, “মা” খুঁজে পাই, সুখভরা বুক
দেখতে বসি চেনা এ মুখ, “মা” খুঁজে পাই, সুখভরা বুক
কুঁড়ি
যখন ফুলটি হবে, প্রতিচ্ছায়ায় জড়িয়ে রবে
খুকুও আমার সঙ্গোপনে, এমনি ভাবে হয়ত মনে।
খুকুও আমার সঙ্গোপনে, এমনি ভাবে হয়ত মনে।
বৈশাখী চক্রবর্তী
যারা জন্মাতে চলেছে
তাদের নরম শরীরের ওপর
নেমে আসুক
সহজ নদী।
আমরা, যারা বেঁচে আছি
বাইশদফা দাবী আর জাতীয়তাবাদী
লাঠির
মাঝের একচিলতে ক্লেদাক্ত
জমিতে,
হেঁটে যাবো নিরঙ্কুশ
শূন্যতার দিকে
অমেয় ক্ষয়িষ্ণু ফুসফুস
বুকে নিয়ে।
কে যেন ডেকে যায়?
বৃষ্টিবেলার লাল ফড়িঙ
হেমন্তের শালিখ
ভোরের বাতাপি ফুলের পাপড়ির
মত নরম চর্যাপদ।
ডাক দিয়ে যায় রাতভর
নির্জন আকাশের যত
চলমান নক্ষত্র পরাগ
আর পৃথিবীর অপাপবিদ্ধ
মাটি বুবুক্ষুর মত তাকিয়ে থাকে তাদের দিকে
ডানা খুলে সব অলীক ভালবাসা
নেমে আসবে এই প্রতীক্ষায়,
শরীরের খোঁজে নেমে আসে
নীলাভ জন্মান্তর
আমাদের পিপাসার্ত শরশয্যায়
ভেসে আসে বিষন্ন ঈশ্বর।
যারা জন্মাতে চলেছে তাদের
খোলা শরীরে ওপর
নেমে আসুক সেই ঈশ্বরের অমল আলো।
জয়ব্রত বিশ্বাস
সম্ভাবনা
কিছুতেই থিতু হয় না অপেক্ষা
অনেক শাখাপথ চলে আসে
বৃষ্টি নামবে ভাবতে ভাবতে
শূন্য মেঘ ফুঁড়ে
নেমে আসে রৌদ্ররেখা
বর্ধিত তাপে ঝরে পড়ে
অনুভব
আরো দুর্বল জায়গায় চলে
আসতে আসতে
গতি বদলে ফ্যালে মৃগনাভি
প্রখর দাবদাহে ঘুরতে
থাকে স্প্রিং
যোগ নেই বিয়োগ নেই
ঠায় জাগে খাড়াই পাড় জলের
কিনারে
একরাশ ভ্যাপসা বাতাস
আটকে থাকে অঙ্কে
ঝিরঝির বয়ে যায় নদী
অনেক শাখাপথ চলে আসে অপেক্ষায় ।
শ্যামলী বন্দ্যোপাধ্যায়
ভারতবর্ষ
কত রকমের দেশপ্রেম মাথচাড়া দিচ্ছে চারিদিকে!
দেখব বলে রোদচশমাটি রেখেছি
খুলে।
তোমার শেকল পরা হাত ধরে
হাঁটিনি আমি। তাই
স্বাধীনতার মানে খুঁজতে
অভিধান হাতড়াই।
আজও কোনও নিশ্চিত ব্রহ্ম
খুঁজে পাইনি।
মিছিল আর বিপ্লবে চারটি
ব্যঞ্জন আজ বড় ক্লিশে!
তেমন অন্ন রেঁধে বেড়ে
কে কবে খাওয়ালো তোমায়?
তবু ভ্রমে দেখি; এই বিপুল
আঁধারের অধিক আঁধার জলরাশি
থেকে
উঠে আসছ তুমি। খুঁজে
পেতে দেখছ –
কোন আর্ষ নাবিকের হাতে
তুলে দেবে
ত্রিবর্ণ আর মুঠো মুঠো
বিপন্নতাগুলি!
কে নোঙর করবে প্রকৃত
বন্দরে?
এমন অলৌকিক টি দেখব বলে
রোদচশমাটি রেখেছি তুলে
…
তনুজা চক্রবর্তী
অক্সিজেন
ঝেড়ে ফেলছি সব ভয়
ফুটছে তরুণ রক্ত---
কুঁচকানো ভুরুর অবিশ্বাস
মুছে দিয়ে
ওরাই, নতুন করে ভাবাতে
জানে--
আঠেরোর ঘর ছেড়ে বেরিয়েও
বেরোতে পারেনা চালসে
মনের
গেঁজে যাওয়া ভাত ঘুমের
স্বস্তির দুপুর।
ছড়বেছড় কথার মাঝে থাক
ভুল,
ওরাই প্রাণ দেয়, নিজেকে
নিয়ে লোফালুফি খেলে।
অক্সিজেনের বিচিত্র রূপ
ওদের থেকে ভালো , আর
কে জানে?
অনিমেষ সিংহ
আধুনিকা
থুতনিতে তিল মানে, তুমি
অভিমানী;
তোমার জ্যোতিষ এক, বন্ধু
আছে জানি-
প্রবাল প্রাচীর থেকে
তুলে আনে ফুল,
হাতের তাবিজে বাঁধে শেয়ালের
চুল।
তোমার বুকের মাঝে ডুব
দিয়ে কেউ,
দেখেনি সমুদ্র আর নদীটার
ঢেউ!
আমার কবিতা খাতা, তুমি
শিরোনামে
আমার চিঠির পাতা, তুমি
নীল খামে।
তোমাকে নিয়েই যুগ-যুগান্তের
কবি,
লিখেছে অমর গান, পাথরের
ছবি।
তোমার জ্যোতিষ এক বন্ধু
ছিলো জানি।
তিল নেই, তবু তুমি, বড়ো
অভিমানী!
আজকে আবার সেই পুরান
অভ্যেসে,
তোমাকে সামনে দেখি পাথরের
দেশে-।
হলুদ লেগেছে গালে, বেলকনি
লাল,
বেগনি চুলের ফাঁকে নামছে
সকাল।
সোনালি ভট্টাচার্য মুখার্জী
আহ্নিক
রোদের রং ঘুরতে থাকে উড়তে থাকে ঋতু
হাওয়ায় ভাসে গন্ধ
কোনটা দুপুর কোনটা বিকেল
দিন বদলের সংগে বুঝি
বদলে যাবেই
জল পৃথিবী, আর কি যাচ্ছে
চুলের রং আর ঝাপসা চোখের
ফিকে
দৃষ্টি, তুমি যতই
বল বয়েস মাত্র সংখ্যা একটা
পুরোনো হয় মনের ভেতর
ছোট্ট বেলার আদর
পাল্টায় দেশ পাল্টায়
বোধ
সামনে দাঁড়ায় ফেটেপড়া
ক্রোধ
অত্যাচার আর বীভৎস রস
হাত ধরে যেই হাঁটে
রাজত্ব ঘরে নেই রাজা
আর
নহবতের সানাই বাজার
চল তো কবেই ঢলে গেছে
হারিয়ে যাওয়ার পাটে
বলত আগে মধ্যযুগের
এখন দেখি সব হুজুগের
ঘরে ত সেই সং সেজেছে
তামাক গাঁজা সুরা।
তবুও জ্বলছে ছাইচাপা
তুষ
নারীও যে নাম চাইছে মানুষ
আগুন গিলেও এগিয়ে চলছে
মানুষীর শিরদাঁড়া।
আমিও শব্দ আঁকিবুঁকি
কেটে
হিসেব কসছি রোদের
ঘুরছে পৃথিবী ফসলের ঘ্রাণ
পুরোনো সুরের মেঘলা আজান
সোনা ভেবে যাকে আঁকড়ে
ছিলাম
বুঝলাম সেই নিকেল ।
শাশ্বতী সরকার (টালিগঞ্জ)
চেয়েছ সে উর্বশী হোক
রাক্ষুসী আমি
তোমারই আয়ু খেয়ে বেঁচে
আছি
এ অভিযোগ বারবার কর
অথচ লাস্যগুলি সযতনে
ধরে আছ বুকে
কবিতা সারদা নয়
চেয়েছ সে উর্বশী হোক
জ্ঞানচক্ষুদুটি ধুয়ে
মুছে
সাফ হয়ে যাক
অঙ্গুলিহেলনে যতবার নাচতে
গিয়েছি
পিছলে পড়েছি ততবার
বজ্রমুষ্ঠিতে টুঁটি চিপে
ধরে বলেছি,
'আয় তবে পিশাচেরা
খুলে দিলাম এ অনন্ত
যোগক্ষেত্র, আয়, উপবিষ্ট
হ'
পালিয়েছ হু হু করে জোকারের
দল
অট্টরবে ছেয়ে গেছে বিষণ্ণ
আকাশ
দশদিক ঘিরে তখনি এসেছে
ঝঞ্ঝা
কাঁধে চেপে নিয়ে ছুটিয়ে
মেরেছে
আকাশ পাতাল নরলোক
তখনি খুলেছে দরোজা
মুক্তি আমার অধরে বসে
খেলেছে তাধিন ধিন
মুক্ত হৃদয় তখনি চিনেছে
যতেক অর্বাচীন।
শেখর বালা
পশু এবং পাখিরাই বেশি মানবিক
পৃথিবীর জন্ম থেকে এখন
পর্যন্ত যত অনিষ্ট হয়েছে সাধন
তাতে কোনো পাখি কোনো
পশু
ছিলো কী আসামি কিংবা
ইন্ধনদাতা?
এই যে হিরোশিমা এই যে
নাগাসাকি
তোমাদের বোমাবাজিতে ছিলো
নাকি সাথী কোনো পাখি?
এই যে হিটলার এই যে রক্তপিপাসু
ধর্মান্ধ নেতারা
তোমাদের হত্যাযজ্ঞে সংগী
ছিলো নাকি...কোনো পশু?
ইতিহাসের পাতায় এরকম
সাক্ষ্য আমার চোখে পড়ে নাই।
এতো মানুষ মরলো এত এত
শিশু
মানুষের রাহাজানি মানুষের
খুনোখুনি থামলো না তবু!
অথচ এই খুনী মানুষেরা,
হিংসায় জিঘাংসায় ভরা ক্লেদ মানুষেরা
ঘুষখোর, সুদখোর, তোষামোদে,
ব্যক্তিত্বহীন অবিবেচক মানুষেরা-
মানবতার ধার না ধারা
কুসংস্কারে নিম্মজিত অন্ধ মানুষেরা-
ক্ষমতার দাপটে চলা বোকা
মানুষেরা-
যখন নিজেদেরকেই শ্রেষ্ঠ
দাবী করে
তখন আমার লজ্জায় মাথা
নত হয়.....
এরকম কৌতুক শোনার পরে
পাখি ও পশুদের সমাজে
না জানি কত হাসাহাসি হয়!
খাওয়া নিয়ে থাকা নিয়ে
পাখির ছানারা যদি কভু ঝগড়াঝাঁটি করে-
হয়তো বয়ঃজ্যোষ্ঠ পাখিরা
তাদের "মানুষের বাচ্চা" বলে গালমন্দ করে!
এই পৃথিবীতে এখন পশু
এবং পাখিরাই বেশি মানবিক।
সেমিমা হাকিম
পদাবলী
অনেকখানি পথ পেরিয়ে যখন
পথিকের ছায়া স্পর্শ করল
চৌকাঠ :
বধূটির হাতে তখন উঠান
নিকানোর শানাব ,
নাকের পাটায় মুক্তোর
মত কিছু পরিশ্রম চিহ্ন ,
কপালে রসকলি মাটির হাল্কা
ছোঁয়ায় ...
চোখ ছুঁয়ে আলো ঠিকরাতেই
সময় গেল থমকে -
আলো-আঁধারীর ছোপ লাগল
তার পোষাকে !
বাঁশবন আর পুকুর পাড়ের
শটিবনে
ঝমঝমলিয়ে উঠল মৃদু হয়ে
আসা কথার ছাপ ,
জোছনার মত হাসিতে তখন
বাউরি পাক ,
রূপকথার মত প্রতিশ্রুতি
আর মিলিয়ে যাওয়া গানের
সুরে যখন
তাল মেলাল বেহালার ছড়
-
পরিচয় বদলে ফেলেছে ঠিকানা
এবং ঘর ...
অনেকখানি পথ পেরিয়ে যখন
পথিকের ছায়া স্পর্শ করল
চৌকাঠ :
বধূটির উঠান নিকানোর
শানাব
দাওয়ায় নক্সা কেটে প্রশ্ন
করল -
একি ভবিতব্য নাকি
হঠাৎ ভেঙে যাওয়া কোন
স্বপ্নের পুনরাবৃত্তি ...
.
.
জারা সোমা
অভিসার
অনল আজ বেপরোয়া সর্বগ্রাসী
পুড়িয়ে দেবে সাজানো গৃহস্থালি
কলার মোহে ধরা পড়ুক চৌষট্টি
অতর্কিতে সুনামী আসুক
লবণজলে ভিজে যাক হৃদয়
সলিল সমাধি হোক অপেক্ষার
চাঁদের গায়ে ঈর্ষার কলঙ্ক
জোছনা গিলে খাক রাত
অভিসার ক্ষণে হোক সাহসী
একটা জব্বর ভূমিকম্প
আসুক।।।
জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়
জীবনকথা
জল
জলের গল্প শুনলে সাগরী
বাউরির কথা মনে পড়ে।বড়ো কষ্টে ওরা
তোমার স্বপ্ন দেখে।ওগো
জল তুমি বিলাসের গল্প ছেড়ে ওদের কাছে যাও।
ওরা তোমায় চাইছে মরুর
ছাগলের মতো।নিজের রক্তে ওদের তৃষ্ণা আর
মেটে না।ওরা তোমাকেই
চায়।
খাবার
সুখাদ্যের গল্পবিলাস
আর ভালো লাগে না দরজায় দাঁড়ায় দীনু মাণ্ডী।
খিদের আগুনে ওরা পোড়ে
অথচ থুঃ!থুঃ! করে খাবার ফেলে দেয়াদের টেবিলে
বেশ পড়ে থাকো অনাদর।
দীনুরা আগুন ঢাকে পিঁপড়ের
ডিম আর লতাপাতা দিয়ে।ওদের একটু
আদর দিও ভাত।
বিত্ত ছেড়ে নিত্য অভাবের
ঘরে যেও।
হাওয়া
হাওয়ার নামে আমার আমি
হারু মালোর কথা ভাবি।
ওরা প্রবল গরমে মরলে
তুমি অকরুণ ঔদাসিন্যে
অদৃশ্য দেয়াল গেঁথে থাকো।ছেঁড়া কাপড় চায় তোমার
শীতঘুম আর ওরা একটু গরম
নেবে।তুমি হিংস্র উদ্যমে চামড়া ছিঁড়ে নাও।
তোমাকে তালগাছ মানে না
সম্পদ।তুমি শুধু নতুন নামে পাতার কুটির ভাঙো।
মরাদের মেরে যত সুখ!তাই
তুমি মরাদেরই মারো!
ফুল
একগুচ্ছ সাদা ফুলে হিমু
বাউরির মুখ আঁকা।নরক এবং দেবালয়ের ফারাক
না জানা বালিকা চাঁদ
দেখার মতো ময়লা টাকা দেখে যাতে তার রুগণ মায়ের
হাসি লেখা।আমি তাকে শিক্ষা
বা শিশুশ্রমের কথা বলতে পারি না কোনো স্বপ্নও
দেখাই না।নিষ্পাপ মুখের
দহনে আমি ফুলকে বলি ওদের দুর্গন্ধ ঘরে
একটু সুরভি ছড়িও।
বিনু মাহবুবা
পলাতক অনুভুতির গল্প
অন্ধ-মায়াময় রোদ ম্যাটম্যাটে
দুপুর তখন দু'টার মতো,
দিনের আওয়াজ তীব্র ছিলোনা
ততো
শালিকটা বারান্দার গ্রিলে
বসেছিলো পুরো সাত মিনিট
তৃষিত চোখে কী যে খুঁজছিলো;
ফেরারী আসামীর মতো
ফেলে আসা স্মৃতি ভারাক্রান্ত, একলা শালিক।
নিঃশ্বাস নিস্তব্ধ শুনছিলাম
ওকে__
পুরো বারান্দা জুড়ে সমুদ্রবৃষ্টির
মতো
ফেলে আসা গাঙ,
বিস্মৃতির গুমোট ভাঙা টুংটাং
অদ্ভুত শুন্যতার সুর
ঝুপঝাপ টুপটাপ
একটুকরো চেতনার চর উঁকি
দিতেই
ইচ্ছে হচ্ছিলো ওকে ডাকি,
ডেকে বলে দিই ---
দুপুরবেলা নদীর কাছে
যেতে আমারও বুক কেমন কাঁপে
গাছের শাখায় অজস্র ঝুমঝুমি
বেজে উঠে যখন; পাখা ঝাপটানো,
উদাস ভিখিরির মতো একসাথ
জড়ো করা আবেগ,
চাতক বাসনা আর বিস্মরণের
ছেঁড়াখোঁড়া পুরোনো বিষাদ ঘেঁটেঘুঁটে
পলাতক অনুভুতির গল্প
ওকে শুনিয়ে দিই !
রাজশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়
ধানিকার মত
স্তব্ধ কিছু মুহূর্তের
চৌকাঠে আমাদের মধ্যেকার দূরত্ব মেঘলা হয়ে গেছে ৷ আমি তপোবনের স্তিমিত আলোয় নিজেকে উন্মুক্ত
করি ৷ একে একে চিনে নিই স্খলনের চিহ্নদের ৷ হাতের তালুর স্পর্শে গড়িয়ে পড়ে ওম ৷ ক্ষতরা
স্পর্ধা দেখায় ৷ দগদগে হয়ে শুয়ে থাকে বিমর্ধ মননের পাশে ৷ এক মুঠো আকাশ আমারও হতে পারত
৷ পদ্ম বন , কস্তুরীমায়া, বিম্বিত গোধূলি তাও ৷ তবু অমিয় ঢালেনি প্রেম ৷ আকন্ঠ গরলের
নিরবধি স্বাদ মন্দ করেছে আমায় ৷ পুড়ে যাওয়া শরীরে কলঙ্কের জালকাঠি বেঁধে দিয়েছে তোমারই
আত্মম্ভরী সমাজ ৷ আমি ধানিকার মত অহর্নিশ জ্বলেছি প্রতিদিন, প্রতিনিয়ত ৷ প্রতীক্ষার
প্রহর প্রশস্ত করি, কোন জনমে তুমি হবে রাধা আর আমার হাতে থাকবে পোড়া বাঁশি ৷
শীলা ঘটক
কাগজপত্তর লাইরে বাবু
কাগজপত্তর লাইরে বাবু
কাগজপত্তর লাই
সেবার যকন বন্যা হলো
হাঁড়ি পাতিল ভেসে গেল
পেটটা লিয়ে মা-টা আমার
ব্যথায় কুঁকড়ে মরে!
সেবার আমি জন্মেছিলুম
ইসকুল বাড়ির ঘরে।
কাগজপত্তর লাইরে বাবু
কাগজপত্তর লাই,
কাইনী মাসি নাড় কাটলো
মংলু চাচা বাপটারে কয়
হয়েচে বটেক বেটা !!
চাঁদের মতন বেটা!!
বন্যু উয়ার নাম রাকলাম,
বন্যু যেদিন জোয়ান হবে
---
বলিস আমার কতা।
ক'দিন পরে মা-বাপটা মোকে
লিয়ে
আসলো ফিরে ঘরে
বাস্ক প্যাঁটড়া সবই ছিল
পলির তলায় পড়ে।
কাগজপত্তর লাইরে বাবু
কাগজপত্তর লাই,
সে তো মেলাবচ্ছর আগের
কতা -----
বাপটা গেছে মরে,
জোয়াল খাটি আবাদ করি
জামিনদারের ঘরে।
কাগজপত্তর কেমনে দেখাই!!
সবই গেচে জলে,
পরমান আমার শরীলটুকু
জন্ম বানের জলে।
শ্রী সেনগুপ্ত
শূন্যতা
এত অসুবিধা করে এসনা
এলে সব কাজ সেরে এসো
দু চার হাতা আবেগের সাথে
অল্প একটু ভালবাসার নুন মিশিয়ে নিয়ে কাছে বসো।
চেখে দেখ আলজিভ অব্ধি
ছড়িয়ে যাচ্ছে প্রেম
দাঁতের ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে
না বলা কথা
আহ শরীর বুড়োচ্ছে তাই
নানান জায়গায় ঘুণ ধরে কাতর যন্ত্রণা ব্যথা।
আবেগ অনেক টাই মশলা মুড়ির
সাথে মাখিয়ে খেয়ে ফেলেছি।
বাকি যে টুকু লেগে আছে কড়ে আঙুলের ফাঁকে তার মেয়াদও ফুরোলো
বলে।
কে যেন মারা গেছে পেছনের
ফ্ল্যাটের নিচ তলায়
তাই কি আজ সকাল থেকে
বার বার একটা চিল পাক দিচ্ছিল
হাওয়া কেটে বসেও ছিল ঘোষেদের এন্টেনায়।
হবে তাই।
কি জানি কে গেল কার নামে
ছড়ানো রাস্তা জুড়ে সাদা ফুল খই।
স্বপ্নে ভাসে অবিন্যস্ত চুলে এক বালকের মুখ
ভাসা ভাসা চোখে বলে আমি
বেঁচে আছি
যে গেল সে আমি নই আমি
নই।
মুঠোয় ধরি ঘাসের মত কোমল
দুটো হাত
মাথা ছুঁয়ে উড়ে যায় প্লেন
শূন্যতায় ভরে দিয়ে ছাত।
অর্পিতা রায়
অনেকটা গল্পের মত
আবার যখন গল্প হবে
তোমাকে মিষ্টি একটা প্রেমের
গল্প শোনাবো,
ভেঙে যাওয়া প্রেম বলছো?
না না তা নয়!
বুকের ভেতর জমাট বাঁধা
গোপন প্রেমের গল্প।
সিঁদুরের মত রাঙা, সোহাগের
আলতো চাদরে মোড়ানো,
অভিমানের রঙ মেশানো গাঢ়
প্রেম।
কবিতা কিংবা বইয়ের পাতার
খাঁজে বন্দী চিঠির প্রেম নয়।
ভোরের শিশিরে, বর্ষার
মেঘলা দুপুরে,
শীতের সন্ধ্যায় হৃদয়ের
উষ্ণতা জড়ানো প্রেম।
আবার যখন গল্প হবে
তোমাকে মিষ্টি একটা প্রেমের
গল্প শোনাবো,
বুকের ভেতর আড়াল করে
রাখা
অনুরাগের ফ্রেমে বাঁধা
একটা ভালোবাসার গল্প।
সম্পা পাল
ফটোগ্রাফার
ফটোগ্রাফার হওয়াটা এখন দুঃস্বপ্ন
কিছু পাখি জড়ো করেছিলাম
রিংটোনে ওরা উড়ে গেছে
বহুমাত্রিক অন্বেষণ, সবাই ছুটছে
একটু দাঁড়ালে
একটা স্টিল লাইফ হয়তো হতো
মেঘগুলো ভাবনা হয়ে আছে
ঝড়ের খবর এগিয়েছে -
কালবৈশাখী কিংবা অকাল বৈশাখী
বাস্তুহারা পাখি কি কখনো লেন্সে ধরা দেয় ?
ফটোগ্রাফার হওয়াটা এখন দুঃস্বপ্ন
কিছু পাখি জড়ো করেছিলাম
রিংটোনে ওরা উড়ে গেছে
বহুমাত্রিক অন্বেষণ, সবাই ছুটছে
একটু দাঁড়ালে
একটা স্টিল লাইফ হয়তো হতো
মেঘগুলো ভাবনা হয়ে আছে
ঝড়ের খবর এগিয়েছে -
কালবৈশাখী কিংবা অকাল বৈশাখী
বাস্তুহারা পাখি কি কখনো লেন্সে ধরা দেয় ?
বর্ষ ৯ সংখ্যা ৬, ১০ জানুয়ারি ২০২০
এই সংখ্যায় ২৭টি কবিতা । লিখেছেন ঃ সংস্কৃতি ব্যানার্জী, হরপ্রসাদ রায়, উৎপল তালধি, ভগীরথ মাইতি, দিগন্ত রায়, অরুণিমা চৌধুরী, বিজয় ঘোষ, রমা সিমলাই, সমরেন্দ্র বিশ্বাস, সৌমিত্র চক্রবর্তী, বিদিশা সরকার, অনুপম দাশশর্মা, বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়, দেবাশিস মুখোপাধ্যায়, শর্মিষ্ঠা ঘোষ, প্রণব বসু রায়, কাজরী বসু, সবর্না চট্টোপাধ্যায়, সুমনা পাল ভট্টাচার্য, অদিতি শিমুল, মন্দিরা ঘোষ, ফিরোজ আখতার, নাসির ওয়াদেন, মৌ মধুবন্তী, অজন্তা রায় আচার্য, শুভাশিস দাশ ও জারিফ এ আলম ।
সংস্কৃতি ব্যানার্জী
ঐশী কে
আর মোমবাতি নয়
আর গলে যাওয়া নয়
লড়াই দিয়ে লড়াই
জ্বালাতে হবে...
আর গলে যাওয়া নয়
লড়াই দিয়ে লড়াই
জ্বালাতে হবে...
দেখো
রক্তের দাগে যেন ঘা
মুছে না যায়।
রক্তের দাগে যেন ঘা
মুছে না যায়।
হরপ্রসাদ রায়
হেমন্তের বিপন্ন মজদুরী গুনে নেব
বৃষ্টির দানা নিংড়িয়ে
অমোঘ বিদ্যুৎ বীজ পুঁতে দেবে বিনিদ্র মাটিতে।
দাঁড়েল টিয়ের ঘুম
কিষাণীর পায়ের ঠুঙরিতে
আলপথে ভেঙে যাবে ।
কোরাস হতেও পারে কাস্তের বাঁকে ।
অমোঘ বিদ্যুৎ বীজ পুঁতে দেবে বিনিদ্র মাটিতে।
দাঁড়েল টিয়ের ঘুম
কিষাণীর পায়ের ঠুঙরিতে
আলপথে ভেঙে যাবে ।
কোরাস হতেও পারে কাস্তের বাঁকে ।
কালকেই দেখা হবে ।
শিমুলের ধারাপাত লেখার
আগেই
হেমন্তের বিপন্ন মজদুরী গুনে নেব কড়ায়গন্ডায়।
হেমন্তের বিপন্ন মজদুরী গুনে নেব কড়ায়গন্ডায়।
উৎপল তালধি
আগুনবিষয়ক
(১)
একথালা আগুন বেড়ে দাও
জঠর শান্ত হোক বহ্ন্যুৎসবে
যুগলাঞ্ছিত ক্ষুধানিবৃত্তি
না হলে
চরাচরে মেঘ জমবে অকালমৃত্যুর
(২)
ইদম্ জঠরনামাগ্নয়ে স্বাহা
বলে বলে
নিজেই দিয়েছি ঝাঁপ ষড়রিপুর
চিতায়
জ্বলন্ত অঙ্গার থেকে
জীবন কুড়িয়ে
আমার অগ্নিকোণে মৃত্যুর
মৃত্যু হয়েছে
(৩)
আগুনের পরশমণি খুঁজতে
খুঁজতে
এই এতদূর এসে বুঝতে পেরেছি
দীপকরাগের মহাবিলম্বিত
লয়ে
আমিই আমার একমাত্র প্রতিনিধি
(৪)
রোদে বসে বানিয়ে নিচ্ছি
আগুনের রং
নিজেকে রাঙাতে হবে বর্ণহীন
ক্ষণে
সূর্যের প্রতিদ্বন্দ্বী
কে কোথায় রয়েছে জানিনা
তবুও রঙিন হবো স্মারকের
আশায়
(৫)
আগুন অনেককিছু ফিরিয়ে
দিয়েছে
অতীতের বর্ণমালা পাঠ
করতে গিয়ে
প্রতি পদে নিজের কৃত
কারুকার্য দেখে
সভ্যতার মহাগুরু পাবককে
যোজক ভেবে
আত্মনেপদী কবে পরস্মৈপদী
হয়ে গেছে
ভগীরথ মাইতি
কুড়ুল
বিষবৃক্ষে ঝুরি নামছে-
আপনার বুক ফুঁড়ে ওই তীক্ষ্ণমুখ ঝুরিগুলো
মাটিতে নোঙর ফেলবে অচিরেই ।
আপনার বাড়িতে একটা কুড়ুল আছে না !
একটা শাবল ! একটা গাঁইতি !
ওগুলো আপনার শ্রদ্ধেয় পূর্বপুরুষের-
আপনি উত্তরাধিকার পেয়েছিলেন ।
বাগানে ফুলের চারা বসিয়েছেন
কুঁড়ি দেখতে চেয়ে আজন্ম জল দিলেন
আলোর জন্য ঘাম ঝরিয়ে পরিষ্কার করলেন আকাশ
আর প্রিয়জনকে বললেন- অপেক্ষা করো
জন্মদিনে আসছি ।
ওরা অপেক্ষায় আছে-
আপনি চলে গেলেও ওরা বিশ্বাস করবে না আপনি নেই ।
জন্মদিনের বিকেল গড়িয়ে গেলেও
ওরা স্থির বিশ্বাসে- আপনি ফুল আনবেন-।
আপনার বুক ফুঁড়ে ওই তীক্ষ্ণমুখ ঝুরিগুলো
মাটিতে নোঙর ফেলবে অচিরেই ।
আপনার বাড়িতে একটা কুড়ুল আছে না !
একটা শাবল ! একটা গাঁইতি !
ওগুলো আপনার শ্রদ্ধেয় পূর্বপুরুষের-
আপনি উত্তরাধিকার পেয়েছিলেন ।
বাগানে ফুলের চারা বসিয়েছেন
কুঁড়ি দেখতে চেয়ে আজন্ম জল দিলেন
আলোর জন্য ঘাম ঝরিয়ে পরিষ্কার করলেন আকাশ
আর প্রিয়জনকে বললেন- অপেক্ষা করো
জন্মদিনে আসছি ।
ওরা অপেক্ষায় আছে-
আপনি চলে গেলেও ওরা বিশ্বাস করবে না আপনি নেই ।
জন্মদিনের বিকেল গড়িয়ে গেলেও
ওরা স্থির বিশ্বাসে- আপনি ফুল আনবেন-।
বিষবৃক্ষে ঝুরি নামছে
আপনার বাগানেও-
আপনার বুক কিন্তু অনাবৃত ।
আপনার বাড়িতে একটা কড়ুল আছে না !
একটা গাঁইতি ! একটা কোদাল !
আপনার বুক কিন্তু অনাবৃত ।
আপনার বাড়িতে একটা কড়ুল আছে না !
একটা গাঁইতি ! একটা কোদাল !
দিগন্ত রায়
ক্যাব
কাঁটাতার গেছে হৃদয় দু'ভাগ
করে
ভাগ হয়েছে ধর্মে, ভাষায়,
দেশে;
ঘটি ভিটে ফেলে ভাঙা বুকে
পরবাস
ভোটের চালেতে থাকা, নইলে ভেসে;
ক্যাব লাগে না, ৱ্যাফ লাগে না বিকাশে
দেশপ্রেম যে শ্রদ্ধায়
সংহতিতে
বিভেদ খোঁজে ধর্ম, ভাষা
ও বর্ণ
ভোটের স্বার্থে শাসক
দুর্মতিতে
একই আকাশ একই বাতাস,
মাটিতে
এক মানুষকে বার বার ভাঙে
বিদ্বেষ
ম্যাপের রেখারা মুছুক,
কবে পাব বলো
পৃথিবী জুড়ে সে একটা
সোনারই দেশ
সীমানা ঘিরে উত্তাপ,
যুদ্ধবিমান
সীমানা জুড়েই বিভেদ হিংসার
রেশ
কাঁটা ভেঙে ভেঙে আর কত
পথ হাঁটলে
পাবে সে ইচ্ছে ডানায়
ওড়ার দেশ!...
অরুণিমা চৌধুরী
মৃত্যুদণ্ড
জানিনা মৃত্যুদণ্ড দিয়েছ
কিনা
তবুও খুব ভোরে নিজেকে
হেঁচরে তুলেছি
'' ওঠো বধ্যভূমিতে যাবে!"
কিছুই গোছানো নেই
ঠাণ্ডা হাওয়া মেখে নোংরা রাস্তা
শুয়ে আছে
কাল রাতে কারা মোচ্ছব
করেছিল
পরিত্যক্ত খাবারের ঠোঙা, পচা ভাত পেরিয়ে উঠে গেছে সিঁড়ি
ওখানেই দেখে নাও যা আমি
দেখতে পাচ্ছিনা
গতজন্মের পাপ পিছু ছাড়ে
না সহজে!
নিজের সঙ্গে নিজে কথা
বলি,
কতবার জল খেতে উঠি,
চুপিচুপি বলি,"
চল পালাই",
চুপিচুপি বলি,"
কী হবে পালিয়ে!"
কাকেই বা ত্রাতা বলে
ডাকা যায়!
খাঁচা নিংড়ে শ্বাস বের
হয়ে আয়
চৌষট্টি নাড়িতে পাক দিয়ে
উগরে আয় অতীত প্রহেলিকা
আর কতদিন বাঁচব ভিষগ!
বাঁচাটা জরুরি খুব
এই দ্যাখো পা মেলে বসে
আছে সংসার, সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম রসিকতা নিয়ে
চোখ মেলে তাকিয়ে রয়েছে আলো। কবে নিভে
যাবে!
মৃত্যুই ধ্রুবক, ধ্রুপদী
ছন্দে
নেমে আসবে শীতল আবেশ
তবু এখনো জানিনা বাঁচতে
চেয়েছি বলে
মৃত্যুদণ্ড দিয়েছ কি সোনা!
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)