
৯ম বর্ষ ২৮তম সংখ্যা ২৭ অগস্ট ২০২০

আলো বসু
আনন্দ
এই যে তুমি আকাশ মাটির কথা বলো
চাঁদ তারার কথা বলো
অরুণোদয় আর অস্তাচলের কথা বলো
নদীর জল, জলের নৌকো
আগাছার মধ্যে ওই যে নাম না জানা ছোট ফুল, পাশে তার ভ্রমরের গুনগুন
এই যে রঙ্গালয়, পেছনের সাজঘর ----
বলো, বলো, কী আছে?
"আনন্দ"
চাঁদ তারার কথা বলো
অরুণোদয় আর অস্তাচলের কথা বলো
নদীর জল, জলের নৌকো
আগাছার মধ্যে ওই যে নাম না জানা ছোট ফুল, পাশে তার ভ্রমরের গুনগুন
এই যে রঙ্গালয়, পেছনের সাজঘর ----
বলো, বলো, কী আছে?
"আনন্দ"
আর এই যে এত হিংসা, দ্রোহ
রক্তপাতের কথা বলো!
বারুদ গন্ধ বুকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাও
তোমার প্রতিবাদ, তোমার মিছিল শেষ পর্যন্ত কী চায়?
"আনন্দ"
বারুদ গন্ধ বুকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাও
তোমার প্রতিবাদ, তোমার মিছিল শেষ পর্যন্ত কী চায়?
"আনন্দ"
আরে তুমি তো দেখছি সেই শিশুটির
মতো!
রোজ সে খেলনা চায়
বলি, খেলনা কী হবে?
বলে খেলবো
খেলাচ্ছলে বলি, খেলে কী হবে শুনি!
বলে "আনন্দ"
রোজ সকালে বাগানের একটি দুটি তাজা ফুল সে এনে দেয় আমার হাতে
আর আমিও কী বলি জানো?
না না, তুমি হেসো না যেন!
রোজ সে খেলনা চায়
বলি, খেলনা কী হবে?
বলে খেলবো
খেলাচ্ছলে বলি, খেলে কী হবে শুনি!
বলে "আনন্দ"
রোজ সকালে বাগানের একটি দুটি তাজা ফুল সে এনে দেয় আমার হাতে
আর আমিও কী বলি জানো?
না না, তুমি হেসো না যেন!
নাজনীন খলিল / দুটি কবিতা
রাতের পৃথিবী
কোন কোন ঘুম ভাঙ্গা রাতে দেখি
পৃথিবীটা নি:সম্বল ভিখিরির মতো
ফুটপাথে কানা উঁচু
থালা পেতে বসে আছে।
তন্দ্রাবেশে
কুয়াশাভেজা নিস্তেজ রাত।
বাতাসের গায়ে
গন্তব্যের প্রশ্নবোধক চিহ্ন এঁকে
একটি নিশাচর পাখি
উড়ে গেলে; তুমুল
পাখসাটে হু হু করে বাজে
অস্ফুট ব্যথাচ্ছন্ন এক সুর।
কখনোবা মানুষও তো
পরিযায়ী পাখি!
শোনা না শোনার
দোলাচলে হিস হিসে ধ্বণি বাজে ;
ঝলসে ওঠে রাতের
চাবুক।
একটা প্রকান্ড কালো
মাকড়শার মতো
কিলবিলে দশপায়ে
হেঁটে যাচ্ছে জমকালো রাত।
যেতে যেতে কোথাও কী
কিছু ফেলে গেলো কেউ
একটি পতত্র?
এক ফোঁটা বিষ?
রঙীন চশমা
দৃশ্য বদলায়না
কেবল চশমার কাচ
বদলায় ।
মাঝে মাঝে
যখন—শীতের কুঁকড়ে যাওয়া পাতার মাঝেও
লিখে ফেলছি জীবন ;
বিবর্ণ ঘাসে
এক টুকরো সবুজ
উষ্ণতা গড়িয়ে পড়ে ।
প্রতিটি স্বপ্নের
ভেতরে আমি যে ঠিকানা খুঁজি ,
কাগজকলমে সেই নাম
কেবলই লিখে যাচ্ছি
ভুল বানানে।
বানান-বিভ্রাটে গন্তব্যের ভুল !
ফেলে যাচ্ছি রঙীন
কাচের চশমা
তৈমুর খান
সাফল্য
চারপাশ থেকে বিস্ময় ছুটে আসছে
প্রেমে পড়ার অভিনয় করে
মাত্ করে দিচ্ছি শহর
সবাই রস ঢেলে দিচ্ছে আমাকে
হাবুডুবু করতলে রসিক নাগর হয়ে
করে যাচ্ছি টইটম্বুর দিনপাত
খুব দামি জিনিসও সস্তায় পেয়ে যাচ্ছি
ঘরদোর কলসি কলসি ভরে নিচ্ছি বিলাস
পলিথিন প্যাকেটেও পাচার করছি সম্মান
সাফল্য দেখতে তুমিও আসবে নাকি ?
তাহলে নির্মোক খুলে বসব নিরালায়
শব্দের পৌরুষে তোমাকেও করে নেব জয়
প্রেমে পড়ার অভিনয় করে
মাত্ করে দিচ্ছি শহর
সবাই রস ঢেলে দিচ্ছে আমাকে
হাবুডুবু করতলে রসিক নাগর হয়ে
করে যাচ্ছি টইটম্বুর দিনপাত
খুব দামি জিনিসও সস্তায় পেয়ে যাচ্ছি
ঘরদোর কলসি কলসি ভরে নিচ্ছি বিলাস
পলিথিন প্যাকেটেও পাচার করছি সম্মান
সাফল্য দেখতে তুমিও আসবে নাকি ?
তাহলে নির্মোক খুলে বসব নিরালায়
শব্দের পৌরুষে তোমাকেও করে নেব জয়
রেজা রহমান
ঘুমকুমারী
চারদিকে এত জল তারপরও কী যে
শুষ্ক বুক
শ্রাবণ বিফল যদি শরতেই পাতারা
ঝরুক।
সেই সব ঝরাপাতা বেনোজলে যায় যাক
ভেসে
পাতার লেখা কি আর কেউ পড়ে দেখে
কোনো দেশে?
জলে যদি ভেজে চোখ ভিজুক না চোখের
পাতাই
ভেতরে না ঢোকে জল সেটাই কি শুধু
দেখা চাই?
আর যদি সেই জল ঢুকে পড়ে বুকের
ভিতরে
শুদ্ধতম অগ্নি তবে অনির্বাণ
জ্বলবে কী করে?
দেখতেই চাস যদি ওকে তুই চোখ
বুঁজে থাক
বানের জলের সাথে দুচোখের জলও
নেমে যাক।
কে জানে ভাটির দেশে আর কত খরা
বন্যা গেলে
আরেক নবান্ন আর আরেক ফটিক জল
মেলে?
এ রকম আর কত প্রতীক্ষিত সন্ধে নষ্ট
হলে
সে ঘুমকুমারী তবে আঁধারের
রুদ্ধদ্বার খোলে?
ইন্দিরা দাশ
গল্প তৈরি হয়
পথে ঘাটে গাঁয়ে গঞ্জে
অচেনায় আনাচে কানাচে
প্রতি মুহুর্তে গল্প তৈরি হয়।
গল্প তৈরি হয় যেভাবে চোখের কাঁচে অনুভূতি ছায়া বদলাতে দেখে চোখ
যখন দূরপাল্লা বাসের জানলা থেকে দেখা যায়
অচেনা শ্যামলা মেয়েটি নেমে গিয়ে
হঠাত মুচকি হেসে নেড়ে দিলে হাত।
গল্প তৈরি হয়
এয়ারপোর্টে দেখা হওয়া প্রাক্তন প্রেমিকা
শিশুপুত্র কোলে দিয়ে
ওয়াসরুম ঘুরতে চলে গেলে
গল্প তৈরি হতে পারে
বেয়নেট ফেলে দিয়ে কাঁটা তার পেড়িয়ে সৈনিক
কোলে তুলে নিলে ঘর রাস্তা হারানো কোনও শিশু
আর সেই সব টুকরো গল্প নিয়ে
ছাদের কার্ণিশ ঘেঁসে দাঁড়ায়
আমার প্রতিদিনগুলো
খামচে ধরতে গিয়ে সেই টুকরোদের
বিপজ্জনক ভারসাম্যহীনতায় দুলতে দুলতে বলি
তবু তো পথে ঘাটে গাঁয়ে গঞ্জে
অচেনায় আনাচে কানাচে
গল্প তৈরি হয়।
সুবীর সরকার
চিঠি
অপেলবাগানে চাকরি করতে গিয়েও আমি কিন্তু
তোমার কথা ভুলিনি
তোমার চোখ জুড়ে মস্ত জলাভূমি
গাছের ছায়ায় নিচে সারি সারি
সাইকেল
শিকার উৎসব শেষে খুব ঝড় উঠেছিল
পাহাড় জুড়ে
সেই কবে থেকেই তো আমি স্বর্গের কথা বলে
আসছি
জলে গা ডোবানো মহিষ
আরশোলার পেছনে দৌড়তে থাকা সাদা
বেড়াল
শেষ রাতের স্বপ্নে নিজেকে পিরামিডের ভেতর
ঢুকে পড়তে দেখি
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)