ঠিকানা
পার হয়ে যাচ্ছি অসীম
কিছু মাস, গ্যালোপিং বুঝি!
পেরিয়ে যাচ্ছি হলুদ প্লাটফর্ম,
ঝাটিংগার পাখি শ্মশান পাহাড়
এখনও এখানে কোনও মৃত্যুর
উপরে স্মৃতির ফলক বসায়নি সরকার...
কোনো বাতাসও বয়ে নিয়ে
আসেনি একখণ্ড মেঘ নাশপাতির বাগান ছুঁয়ে
পিপিই পরিহিতা মৃত ঠান্ডা
শরীরের ঠিকানায়...
বসে আছি ঠায় মধুমতী নদীটির
লঞ্চে পারাপারের টিকিট হাতে,
পুরোনো বন্যেরা নতুন
হয়ে রোজ গল্প বলে যায় চড়ুইভাতির
সব গিরিশিরা বেয়ে বেয়ে
প্রচন্ড জ্বরে গলে যাচ্ছে গ্লেসিয়ার...
ভয়ের চোখতলা জুড়ে আগুনে
হয়েছে গুঁড়ো গুঁড়ো আয়ুরেখা
মধুমাখা আখক্ষেতে, কাশফুলের
বনে, আকাশবাণীর অফিসে
সবাই বদলে দিতে চেয়েছিল
শরৎকালের নীলকমলের রঙ
তবুও নিমফুলের রাতে ভুল
ঋতু ভেঙে কোকিলের ছায়ানট...
যেমন করে থইথই করা আমার
আস্ত বর্ষাকালের উঠোনে
বসে যেতো তোমার সাইকেলের
চাকার দাগ দুর্দম স্পর্ধায়।
মড়ক হয়েছে বলে শুকিয়ে
গিয়েছিল আলতা বাটির মধ্যযাম
বলাবলি করছিলাম দুর্ভিক্ষে
পাল্টে গেছে পৃথিবীর কক্ষপথ...
যেন এক ঝাঁ ঝাঁ নির্জন
দুপুরে সূর্য বারান্দাকে একলা রেখে
হলুদ কাঠচাঁপার হরিদ্রাভে
হারিয়ে যাচ্ছে আপন বেখেয়ালে
পূর্বপল্লীর পথে পথে
রবি ঠাকুরের যে পায়ের ছাপদেরকে
আগলে রেখেছিল আশ্বিনের
গহন নিকুঞ্জলতার ঝোপ,
আজ ঢেকে গেছে নীল প্রজাপতির
ঝরে পড়া পাখায় তারা
তবুও আমাদের ভয়ের পাশেই
সায়রের ক্লান্ত ঢেউয়ে
চাঁদ ঝাঁপ দিয়েছিল নির্ঘুম
মাঝরাতের অনিশ্চিত জলে,
বলে গিয়েছিল আমাদের ভালবাসাবাসির
নেশা কেটেছে,
বাদুড়ের পাখায় উড়ে যাওয়ার
সময় গলে যাচ্ছে
আমার শরীরের যাবতীয় স্নেহপদার্থ,
মালকোষে নেশাতুর 'আমি'
ঝরছি মাটিতেই টপ টপ, টপ টপ
একা একা...
রূপোর ঘুম
দেখো চিবুক তুলে দাঁড়িয়ে
আছে জোছনাময় চাঁদ।
রূপোর ঘুম তুলো উড়ছে
ঘরময়।
বেডসাইড টেবিলের পাশে
দাঁড়িয়ে পাথরের হরিণ। ইমনোসিয়ার তরঙ্গে দুলছি।
বিছানাময় ভাসছে কবিতার
সংলাপ। মনে পড়ে গেছে গতজন্মের শীতে দেখা কবিগানের আসরের কথা।
আজ আমি আবারও পাঠ করছি
শীতকাল। খাতার ভাঁজে শুইয়ে দিলাম উপহারের আদুরে লাল গোলাপ।
কোনও এক শীতকালে ফসিল
হবে সে। আর তার সুগন্ধ ডুবসাঁতার কাটবে গভীর সমুদ্রে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন