একটি মূক ধারণা
আমার নিদ্রাতুর আদিম শরীরটা কেমন হটাৎ কুঁচকে উঠলো কুকুরগুলোর মাতামাতিতে। ভাবতে লাগলাম, ওরা এই সময় এলাকা বিতর্ক ছেড়ে তো উত্তরাখণ্ডের বিধ্বংস নিয়েও কোলাহল ছুঁড়তে পারে। কিন্তু আগাগোড়া ওদের বঙ্কিম লেজের মতন স্বাভাবিক রাস্তাতেই এনকোড করে গ্যালো সবাই। আমার সন্দেহ বাড়তে থাকে, ভাষা-ভিযানে পা বাড়ানো চাট্টিখানি কথা এই সময়ে। তবু কেউ ভেবে দেখলে না, আমার ঝুনো পেয়ারা গাছের আড়ালে লক্ষ্মীপেঁচা কেন কুহু ডাকেনি কখনো। কেউ ভেবে দেখলে না, ভাবের ঘোরে শব্দের যে অযৌক্তিক ভ্যানিশ, তার পিছনেই কিভাবে লুকিয়ে ছিল লাজুক বিবাহবার্ষিকীর উপহার। না বলার-ও ভাষা ছিল, আমার প্রেমিক বলতো, অস্পষ্ট, অনুচ্চারিত। মন্দারমণি ঢেউয়ের আউটলাইন চোখের উঠোনে ফুটিয়ে তুলে। আমি বুঝতাম, শরৎ এসেছে।
ভাষা না থাকতে ভাষার মর্যাদা থাকে। আমি যখন কাঁচা মহেঞ্জোদারোর সক্রিয় ব্যবসায়ী ছিলাম, আমার পেয়ালার চলকানোতে বুঝেছে লোকে আমার অতৃপ্ত তেষ্টার জৌলুস এবং অতৃপ্ত-তর উচ্চাকাঙ্ক্ষা। যখন ডালিম ফলের মতন লালচে ট্যান মেখে দ্বিপ্রহর লোহিত সাগরের বুকে কাটিয়েছি, হাতছানি দিয়ে ডেকে গ্যাছে ঈশান কোণ থেকে ধাওয়া করা সাইক্লোন সব। ওদের কারোর তথমুহূর্তে বাগযন্ত্রের অভাবে প্রতিবন্ধকতা লক্ষ্য করিনি। নিয়ানডার্থাল এরার পাথরের সাথে এই নিয়ে ঝগড়া লেগে যেত, সেকালে অবশ্য মৌহর্তিক গোঙানি-ই ছিল প্রায় সব, একাধারে সংকেত ও যোগাযোগ বার্তা। ঝগড়া থেকে আগুন বেরোতো। সে আগুন জ্বলতে নিভতে ২০০ বছর দেশের ভাষা এবং অ-ভাষাবিদেরা লাগিয়ে দেয় কেবল 'স্বাধীনতা'র আক্ষরিক অর্থ বুঝতে ও বোঝাতে। এদিকে তিন বছর তালিমের পরেও আজকাল আমার স্প্যানিশ ইনকুইজিশন মারবেলে গিয়ে ঠোক্কর মারে, এবং কড়ে আঙ্গুলের দুর্ঘটনাগুলো মাতৃভাষাতেই সাইরেন দেয় আকস্মিক আতঙ্কে। ভাবি এও যে, মানিকজেঠুর জন্মের শতবর্ষ পূর্তিতে যদি কোনো শঙ্কু অর্নিথনের কাছাকাছি একটা যন্ত্র বানাতে সক্ষম হয়, তবে সাপ্তাহিক স্ট্যাটিসটিক্স গছিয়ে কর্ভাসগুলোর রাজনৈতিক আর্জি-আবেদন রাখা যেত। বোঝা যেত উল্টোদিকের বাড়ির ছাদে বেলা ৩টে হতেই আসর পাতাটা স্রেফ কূটনীতির তাগিদে কিনা।
ব্যাকরণের অবহেলিত পাতাগুলোয় ভাষার সংজ্ঞায় 'মনের ভাব প্রকাশ হেতু' পড়েছিলাম। এখন মিনিমালিজম'র রেওয়াজে বাক্য পুরুষ থেকে পিঁপড়ে সমান হচ্ছে, এবং লোকে নায়িকার ঠোঁট কাঁপানোতে তার আসক্তি অনুভব করতে পারছে নির্দ্বিধায় বজ্রবেগে। তাই আমরা বোধ করি পাথর ঠুকে আগুনের যুগেই ফিরে চলছি সকল যুগান্তকারী সময় পার করে। বোধ করি আর এক লক্ষ্য উনিশ দিন পর রাতের কড়ানাড়া-তেই হবে অন্তমিল ইতি। কবি কি আর তারপরেও শুধোতে চাইবেন...?
অবনী, বাড়ি আছো?
Writer er lekhoni ki amar pronam. Ei uccho chinta bhabnar jogot shudhu bodh kori onar pokkhei shombhob. I've no words to express my gratitude and love for her. 😘😘😘
উত্তর দিনমুছুন